প্রতিদিন ২৪ ডেস্ক
আগামী ২৪ মে বিভক্ত ঢাকা সিটি করপোরেশনের (ডিসিসি) ভোট গ্রহণ।
নির্বাচনে দলীয় প্রার্থিতা নিয়ে চরম বিপদে আছে আওয়ামী লীগ ও মহাজোট। শরিকেরাও এবার
মেয়রপ্রার্থী দেয়ার ঘোষণা দেয়ায় বিপাকে পড়েছে সরকারি দল আওয়ামী লীগ। আবার নিজ দলের
ভেতরেই একাধিক ব্যক্তি প্রার্থী হওয়ার আগ্রহ প্রকাশ
করেছেন। অন্য দিকে চারদলীয়
জোটের শরিকদের মধ্যে তেমন কোনো বিভেদ নেই। তবে তারাও প্রার্থিতা নিয়ে
সিদ্ধান্তহীনতায় রয়েছে। উভয় নেত্রী দেশে ফেরার পর সিদ্ধান্ত হবে বলে জানা গেছে।
তবে মহাজোটের কোনো কোনো দল সম্মিলিত সিদ্ধান্ত হলে মানবে এবং দলীয় প্রার্থিতা
প্রত্যাহার করে নেবে বলে উভয় জোটের নীতিনির্ধারকদের সাথে আলাপ করে বিষয়টি জানা
গেছে। গত ১১ এপ্রিল থেকে প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র সংগ্রহের কাজ শুরু হয়েছে। প্রার্থী হওয়ার জন্য আগ্রহীরা ইতোমধ্যে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন। সিটি করপোরেশন নির্বাচন প্রকৃতপে নির্দলীয় স্থানীয় সরকার নির্বাচন। এখানে দলীয়ভাবে কোনো প্রার্থী দেয়া হবে কি না মহাজোটের প্রধান দল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ এ ব্যাপারে কোনো আনুষ্ঠানিক বা অনানুষ্ঠানিক ঘোষণা দেয়নি। কিন্তু মহাজোটের অন্যতম শরিক দল জাতীয় পার্টি (এরশাদ) এবং জাসদের প থেকে ডিসিসি উত্তর ও দেিণর প্রার্থীদের নাম আজ থেকে প্রায় এক মাস আগেই আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেয়া হয়েছে। তাদের প্রার্থীরা তফসিল ঘোষণার আগে থেকেই মাঠে রয়েছেন। আওয়ামী লীগ ঘোষণা না দিলেও দুই ডিসিসি অংশ থেকে তাদের বেশ কয়েকজন ব্যক্তি প্রচারণার কাজ করেছেন। আগামী ১৯ এপ্রিল মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ দিন।
মহাজোটের ঢাকা উত্তরের সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে মাঠে আছেন জাসদের শিরিন আক্তার, নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, আখতারুজ্জামান ও সাবেক নেতা মাহমুদুর রহমান মান্না, জাতীয় পার্টি এরশাদের বাহাউদ্দিন আহমেদ বাবুল। আর দেিণ মাঠে আছেন, আওয়ামী লীগের সাঈদ খোকন, সাবেক এমপি হাজী সেলিম, জাতীয় পার্টির কাজী ফিরোজ রশীদ। নির্বাচন মহাজোটগতভাবে করার সিদ্ধান্ত হলে জাসদ তাদের প্রার্থীদের প্রত্যাহার করে নেবে। কিন্তু এরশাদের জাতীয় পার্টি দেিণর মেয়র পদটি ছাড়বে না। প্রয়োজন হলে তারা এককভাবে নির্বাচন করবে।
আর চারদলীয় জোট নির্বাচনের ব্যাপারে এখনো কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়নি। তবে তাদের প থেকে বিএনপির বেশ কয়েকজন সম্ভাব্য ব্যক্তি মনোনয়নপত্র ইতোমধ্যে সংগ্রহ করেছেন। উত্তর থেকে বিএনপির এখলাস উদ্দিন মোল্লা, এস এ খালেক ও ইশরাক সিদ্দিকী। তবে এখানে বেশি শোনা যাচ্ছে এফবিসিসিআইর সাবেক সভাপতি আবদুল আউয়াল মিন্টুর নাম। আর দেিণ সাবেক ছাত্রদল সভাপতি নাসিরউদ্দীন আহম্মেদ পিন্টুর পক্ষে ফরম নেয়া হয়েছে। এখানে ব্যবসায়ী ও এপেক্স ট্যানারির হারুনুর রশীদের নাম শোনা যাচ্ছে। তবে দলের চেয়ারপারসন বিদেশে যাওয়ার আগে ফরম তোলার জন্য একটা ইতিবাচক নির্দেশনা দিয়েছেন। এসেই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন বলে দলীয় সূত্র জানায়।
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল-আলম হানিফ নয়া দিগন্তকে বলেন, এটা স্থানীয় সরকার নির্বাচন। দলীয়ভাবে এখানে কোনো মনোনয়ন দেয়ার সুযোগ নেই। ফলে যেখানে দলীয় কোনো সুযোগ থাকছে না, সেখানে মহাজোটের বিষয় আসে না। তিনি বলেন, আগামী ১৯ এপ্রিল মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ দিন। দেখি কারা কারা দাখিল করেন। সেখানে যারা সৎ ও যোগ্য প্রার্থী হবেন তাদের আমরা সমর্থন দেবো।
এ েেত্র মহাজোটের কোনো বৈঠক হবে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, নেত্রী দেশে এলে শীর্ষ নেতারা সিদ্ধান্ত নেবেন। এখনো সে ব্যাপারে কোনো সিদ্ধান্ত নেয়ার সময় আসেনি।
জাসদের সভাপতি হাসানুল হক ইনু এমপির সাথে এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, তার দলের প থেকেই শিরিন আক্তারকে ঢাকা উত্তরের জন্য নির্বাচন করতে বলা হয়েছে। তিনি রাজি হয়েছেন। প্রচারণাও চালাচ্ছেন। মনোনয়নপত্রও তুলেছেন। আমরা ওই পদটি তার জন্য চাইবো। তিনি বলেন, স্থানীয় সরকার নির্বাচন জোটবদ্ধ হয় না। আমরা চেষ্টা চালাব শিরিনকে ধরে রাখার জন্য। তার পরও যদি মহাজোটগত কোনো সিদ্ধান্ত হয়, তাহলে তা আমরা মেনে নেবো।
আর মহাজোটের প্রধান শরিক এরশাদের জাতীয় পার্টির কাজী ফিরোজ রশীদ জানান, জাতীয় পার্টি দেিণর জন্য তাকেই মনোনীত করেছে। এখানে তারা এই পদটি ছাড় দেবে না। তিনি বলেন, আমাদের দলের সিদ্ধান্ত এই অংশে নির্বাচন করার। এ ব্যাপারে সরকারি দলের সাথেও আলাপ হয়েছে।
বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য এম কে আনোয়ারের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, এখনো এ ব্যাপারে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। তবে নির্বাহী কমিটির সভায় অনেকেই নির্বাচনের ব্যাপারে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। কিন্তু সেখানেও কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। দলের চেয়ারপারসন দেশের বাইরে। উনি এলে সিদ্ধান্ত দেবেন।
বিএনপি স্থায়ী কমিটির অপর সদস্য লে. জেনারেল (অব:) মাহবুবুর রহমান জানান, এটা স্থানীয় সরকার নির্বাচন, এখানে দলীয় কোনো মনোনয়ন দেয়ার সুযোগ নেই। তাই সেভাবে এখনো আনুষ্ঠানিক কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। তবে যারা যারা ফরম তুলছেন, চেয়ারপারসন দেশে ফিরলে শীর্ষপর্যায়ের একটা সভা হবে। সেখানে হয়তো সমর্থন দেয়ার বিষয়টি আলোচনা হবে। তিনি বলেন, বর্তমান সরকারের যে অবস্থা তাতে, বিএনপি সমর্থিত কোনো প্রার্থী এই নির্বাচনে থাকলে তিনি ভালোভাবেই জিতে আসবেন। আর এই নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহারের বিষয়টিও আমরা দেখবো কী হয়।
No comments:
Post a Comment