প্রতিদিন ২৪ ডেস্ক
ত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিলে আদালতের রায়ের সমালোচনা করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য এমকে আনোয়ার বলেছেন, “বিচারপতি ১০ লাখ টাকার বিনিময়ে এমন একটি রায় দিলেন
যেটির কারণে দেশ আজ সংকটের মুখোমুখি।”
সোমবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। ‘তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অপরিহার্যতা: প্রেক্ষাপট বাংলাদেশ’ শীর্ষক আলোচনা সভার আয়োজন করে আগামীর বাংলাদেশ। এতে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের চেয়ারম্যান মো. শাহ আলম।
এমকে আনোয়ার বলেছেন, “আওয়ামী লীগ কখনো গণতন্ত্রের পক্ষে ছিল না। সর্বপ্রথম তারাই সংবিধানকে কলঙ্কিত করেছে। পঞ্চম সংশোধনীর মাধ্যমে জিয়াউর রহমান সংবাদপত্র ও বিচারবিভাগের স্বাধীনতাসহ সব নাগরিক অধিকার দিয়েছেন। সেদিন বাকশালীরাও সেটির বিরোধিতা করতে পারেনি।”
তিনি বলেন, “স্পিকার সংসদে অসত্য কথা বলেছেন। তিনি বলেছেন বেগম জিয়া সংসদে এসে তত্ত্বাবধায়কের কথা বলেননি। অথচ বেগম জিয়া পরিষ্কারভাবে বলেছেন ‘তত্ত্বাবধায়ক ব্যবস্থা পুনর্বহাল করতে হবে।’’
এমকে আনোয়ার আরো বলেন, “স্পিকার আরেকটি অসত্য কথা বলেছেন- সংসদে শেখ হাসিনা খালেদা জিয়ার বক্তব্য ভালোভাবে শোনেননি। খালেদা জিয়ার বক্তব্যের সময় শেখ হাসিনা উপস্থিত ছিলেন না। তিনি যদি তখন খালেদা জিয়ার বক্তব্য শুনতেন তাহলে তিনিও শেখ হাসিনার বক্তব্য শুনতেন।”
বিএনপির এই নেতা বলেন, “সরকারের দলের মধ্যেও অনেকে বলছেন সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানে তত্ত্বাবধায়কের বিকল্প নেই।”
তিনি সরকারের প্রতি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, “গত ক’বছরে যতো অপকর্ম করেছেন তার সবগুলোর বিচার হবে। কোথাও পালিয়ে যেতে পারবেন না।”
বিএনপির কেন্দ্রীয় অর্থবিষয়ক সম্পাদক আব্দুস সালাম বলেন, “দেশ পরিচালনায় আওয়ামী লীগ ব্যর্থ হয়েছে। শেখ হাসিনার দল একগুঁয়ে দল। তার (শেখ হাসিনা) বাবাও কারো বিরোধীতা সহ্য করতে পারতেন না। তিনিও এখন কোনো সমালোচনা সহ্য করতে পারেন না। তাদের দলের বিরুদ্ধে সব বলা নিষিদ্ধ। দেশ মনে হয় তাদের বাপ-দাদার সম্পত্তি।”
তিনি বলেন, “বিএনপির প্রোগ্রামের দিন খাওয়ার হোটেল পর্যন্ত বন্ধ করে দিয়েছে। এই সরকারের অধিনে কীভাবে নির্বাচন মানবো আমরা। শুধু একদিন সংসদে যেয়ে বিরোধীদল কথা বলায় পরের দিন সংসদ মুলতবি করে দেয়। এদেশে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা ছাড়া কোনো নির্বাচন হবে না।”
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক আ.ফ.ম ইউসুফ হায়দার বলেন, “তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা ছাড়া নির্বাচন গ্রহণযোগ্য হবে না। যে সরকার বিরোধীদলের বইয়ের মোড়ক উন্মোচনের অনুষ্ঠান পর্যন্ত বন্ধ করে দেয়, সে সরকারের অধীনে কীভাবে নিরপেক্ষ নির্বাচন হবে। এটি অসম্ভব। তাই তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধিনেই নির্বাচন করতে হবে।
সভার সভাপতি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক শাহ আলম বলেন, “ইভিএম মেনে নির্বাচনে গেলে সেটি বিএনপির জন্য হবে আত্নঘাতি। তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতা দখল করতে আওয়ামী লীগ নীল নকশা তৈরি করছে।’’
সভায় আরো বক্তৃতা করেন বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য মেজর অব. মিজানুর রহমান, সংসদ সদস্য রাশেদা বেগম হীরা, শিক্ষক-কর্মচারী ঐক্যজোটের চেয়ারম্যান মো: সেলিম ভূঁইয়া প্রমুখ।
No comments:
Post a Comment