প্রতিদিন ২৪ ডেস্ক
ঢাকা, ১ এপ্রিল: সমুদ্রবিজয়ে অবদানের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে জাতীয় নাগরিক কমিটির সংবর্ধনার ব্যাপারে ব্যাপক
কর্মসূচি হাতে নেয়া হয়েছে। রোববার বিকেলে রাজধানীর হোটেল রূপসি বাংলায় সমুদ্রজয় উদযাপন জাতীয় নাগরিক কমিটির দ্বিতীয় সভায় এ আয়োজনের সামগ্রিক কর্মকাণ্ডের ব্যাপারে আলোচনা হয়।
এর আগে ২৮ মার্চ রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইন্সটিটিউশনে কমিটি প্রথম বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। ওই বৈঠকে ২৮ এপ্রিল প্রধানমন্ত্রীকে গণসংবর্ধনা দেয়ার সিদ্ধান্ত হয়।
গণ সংবর্ধনার ব্যাপারে রোববারের বৈঠকে বিস্তারিত আলোচনা হয়। তবে সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের ভেনু এখনো ঠিক হয়নি। বৈঠকে তিনটি ভেনু সম্পর্কে মতদেন উপস্থিত বিশিষ্ট জনেরা। এগুলো হলো সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজা, বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়াম এবং বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্র।
তবে এটি গণসংবর্ধনা হওয়ার কারণে সাধারণ মানুষের যাতে ব্যাপক সম্পৃক্ততা থাকতে পারে সেজন্য অধিকাংশই সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজার ব্যাপারে মত দেন। এই গণসংবর্ধনা প্রাণবন্ত করতে বিভিন্ন মতামত তুলে ধরেন বৈঠকে উপস্থিত নেতারা।
মতামত গুলোর মধ্যে রয়েছে- ২৮ তারিখের অনুষ্ঠান একযোগে ৬৪টি জেলায় স্টেডিয়ামগুলোতে ডিজিটাল পদ্ধতিতে লাইভ কাস্ট (সরাসরি দেখানো) করা যায় কি না, প্রতিটি বিভাগীয় শহরে এবং ঢাকার সংসদীয় আসনগুলোতে কনসার্ট করা, কোনো ডকুমেন্টারি তৈরি করাসহ প্রচারের ব্যাপারে বিভিন্ন কৌশলের কথা তুলে ধরেন তারা।
তারা বলেন, ‘‘এই অর্জনকে কেন্দ্র করে বর্তমান সরকারের অন্য অর্জনগুলোও তুলে ধরতে হবে। আর এই প্রচারণার সময়কাল হবে আগামী নির্বাচন পর্যন্ত। সরকারের অর্জনগুলো তুলে ধরে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তির সকল প্রকার অর্জন এই প্রচারণার মাধ্যমে তুলে ধরতে হবে। অন্যথায় আগামী নির্বাচনে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তিকে ক্ষমতায় আনা সম্ভব হবে না।’’
এ সময় উপস্থিত নেতারা অভিযোগ করে বলেন, ‘‘আওয়ামী লীগ সরকারের প্রতিনিধিরা প্রচারণায় অনেক দুর্বল। যে কারণে সরকারের অর্জনগুলো ম্লান হতে চলেছে।’’ তবে এই ব্যাপারে দ্বিমত পোষণও করেন অনেকে। অনেকের মতে ‘‘সমুদ্রজয়ের সাথে সরকারের অর্জন প্রচারণার কোনো সম্পর্ক নেই। এমনকি আগামী নির্বাচন পর্যন্ত এই প্রচারণা চালিয়ে যাওয়ারও কোনো প্রয়োজন নেই। কারণ এটা মুক্তিযুদ্ধের পরে সবচেয়ে বড় অর্জন। তাই এর সাথে অন্যকিছু যুক্ত করলে এই অর্জনের ঘাটতি পড়ে যাবে।’’
সমুদ্রজয় উদযাপন জাতীয় নাগরিক কমিটির আহবায়ক করা হয়েছে অধ্যাপক জিল্লুর রহমানকে এবং সাধারণ সম্পাদক করা হয়েছে অর্থনীতিবিদ কাজী খলিকুজ্জামানকে। এছাড়া ৫০১ সদস্য বিশিষ্ট কমিটিতে ১১ জন কো-চেয়ারম্যান রয়েছে। এছাড়া জয়কে দেশবাসীর কাছে পৌঁছে দিতে দুইটি রুটে ভ্রমণ করা হবে।
আগামী ২১ থেকে ২৪ এপ্রিল পঞ্চগড় থেকে সেন্টমার্টিন এবং ৮ থেকে ১০ মে বাংলাবান্দা থেকে মংলা হয়ে সুন্দরবনের কটকা পর্যন্ত। এই ভ্রমণে যেসব জেলা কিংবা থানা শহর পড়বে সেখানে সংক্ষিপ্ত আকারে আনন্দ উৎসব করা হবে।
পরে এক সাংবাদিক সম্মেলনে কাজী খলিকুজ্জামান বলেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রীর পাশাপাশি পুরো দেশবাসীকে আমরা নাগরিক কমিটির মাধ্যমে সংবর্ধনা দিতে চাই। মাত্র এ কাজের প্রক্রিয়া শুরু করলাম।’’
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘‘সমুদ্র বিজয়টাকে বাংলাদেশের বিজয় হিসেবে আমরা দেখছি। এর মূল কারিগর আওয়ামী লীগ। বিজয়ের গুরুত্ব তুলে ধরা দরকার বলে আমাদের এ উদ্যোগের। আর যদি এটার সাথে আওয়ামী লীগ যুক্ত হয় তাহলে তাদের সকল অর্জন তুলে ধরাতে কোনো সমস্যা নেই। তবে আমাদের কাছে নির্বাচন মূখ্য নয়।’’
অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতাসহ কবি, সাহিত্যিক, সাংবাদিক, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব, ব্যবসায়ী, ক্রীড়াব্যক্তিত্বসহ সকল স্তরের ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন।
No comments:
Post a Comment