মিয়ানমারের
সঙ্গে বাংলাদেশের সমুদ্র সীমায় ন্যয্য অধিকার প্রতিষ্টিত হওয়ায় প্রধানমন্ত্রী শেখ
হাসিনাকে বিশাল যুব গণসংবর্ধনা দিয়েছে য্বুবসংগ্রাম পরিষদ। বিকালে বঙ্গবন্ধু জাতীয়
স্টেডিয়ামে এই সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী দৃঢ় কণ্ঠে বলেছেন, অধিকারে আসা
সমুদ্রের ব্লক, গ্যাস, তেল ও জলসীমাসহ সব সম্পদের মালিক এখন বাংলাদেশ। এখন আমরা
সেসব সম্পদ উত্তোলন করে
দেশের উন্নয়নে কাজে লাগাবো। কেউ আমাদের সমুদ্র সম্পদ আহরণে
আর বাধা দিতে পারবে না। কেউ আমাদের অধিকার ছিনিয়ে নিতে পারবে না। তিনি বলেন,
বিরোধী দল এ বিজয় অর্জনকেও সহ্য করতে পারছে না। সারা জাতি যখন সমুদ্র বিজয়ে
উল্লাস-উচ্ছ্বাস করছে তখন তারা এ থেকে কি বিজয় এসেছে তা নিত্তি দিয়ে মাপার চেষ্টা
করছে। তারা জাতিকে বিভ্রান্ত করে এ বিজয় নস্যাতের ষড়যন্ত্রে নেমেছে। ‘সমুদ্র জয়’
নিয়ে দেশের মানুষকে বিভ্রান্ত না করতে তিনি বিরোধী দলের প্রতি আহবান জানান।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘‘আওয়ামী লীগ সরকার দেশের গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে
শক্তিশালী করেছে। দুর্নীতি দমন কমিশন, তথ্য কমিশন, নির্বাচন কমিশন, মানবাধিকার কমিশনকে শক্তিশালী
করে জনগণের ক্ষমতায়নকে আরো শক্তিশালী করেছে।’’
প্রধানমন্ত্রী
সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে বলেন,
‘‘এদেশের সন্তান হয়ে যারা
পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর কাছে আমার মা-বোনদের তুলে দিয়েছিল, যারা
অগ্নিসংযোগ, লুটপাট চালিয়েছিল তাদের বিচার শুরু হয়েছে।
তাদের বিচার করে বাংলার জনগণকে অভিশাপমুক্ত করবো।’’
সমুদ্রসীমায়
২০০ নটিক্যাল মাইল পর্যন্ত এলাকায় বাংলাদেশের অধিকার প্রতিষ্ঠিত হওয়া উপলক্ষে যুব
সংগ্রাম পরিষদ আয়োজিত এই সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন যুবলীগের চেয়ারম্যান
ওমর ফারুক। যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক এবং জাতীয় সংসদের হুইপ মির্জা আজমের পরিচালনায়
অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য এবং জাতীয় সংসদের
উপনেতা সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী, সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম,
উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আমির হোসেন আমু, সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম, যুগ্ম
সাধারণ সম্পাদক এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডা. দীপু মনি, সাংগঠনিক
সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানকসহ যুব নেতারা।
সংবর্ধিত
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘‘আজকের এই সংবর্ধনার
মধ্য দিয়ে যুব-সংগ্রাম পরিষদ সারা বাংলার জনগণকে সংবর্ধনা দিলেন। আজকের এই অর্জন
বাংলাদেশের অর্জন।’’
প্রধানমন্ত্রী
শেখ হাসিনা সমুদ্রসীমা অর্জনের জন্য পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, নৌবাহিনী,
এবং আন্তর্জাতিক আইনজীবীদের ধন্যবাদ জানান।
শেখ
হাসিনা বক্তৃতার শুরুতে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, জাতীয় চার
নেতা, মুক্তিযুদ্ধের সকল শহীদদের প্রতি স্মৃতিচারণ করেন।
প্রধানমন্ত্রী
তার পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দুরদৃষ্টির কথা উল্লেখ করে বলেন, ‘‘জাতির পিতা ১৯৭৪ সালে সমুদ্রসীমায় অধিকার নিশ্চিত করার
আহবান জানান। এরপর ১৯৮২ সালে জাতিসংঘ আর্ন্তজাতিক সমুদ্র আইন তৈরি করে।’’
শেখ
হাসিনা বিরোধী দলের সমালোচনা করে বলেন, ‘‘সমুদ্রে অধিকার
প্রতিষ্ঠা করার আগেই বিরোধী দল তেল-গ্যাস ব্লক টেন্ডার দেয়, এটা এক
ধরণের ভাওতাবাজি, ধোঁকাবাজি।’’
প্রধানমন্ত্রী
বলেন, ‘‘সমুদ্র সীমায় আমাদের অধিকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। নতুন করে
আবার তেল ব্লক, গ্যাস ব্লক নিশ্চিত করবো। আমাদের সমুদ্রসীমার প্রাকৃতিক সম্পদ আমরা
আহরণ করবো, কেউ বাধা দিতে পারবে না।’’
বাংলাদেশের
পররাষ্ট্রনীতির প্রশংসা করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘‘প্রতিবেশী
রাষ্ট্রের সাথে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রেখে নিজেদের অধিকার নিশ্চিত করতে
একমাত্র আমরাই পারি।’’
তিনি
বিএনপি নেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার ধন্যবাদ প্রসঙ্গে বলেন, ‘‘এটা আমাদের জাতির জন্য দুর্ভাগ্য। ধন্যবাদ দিলো আবার
ফিরিয়ে নিলো’’
শেখ
হাসিনা বলেন, ‘‘বিরোধী দল কিছু দিতে পারে না। খালি নিতে পারে। অন্যদিকে
আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় থাকলে মানুষ কিছু পায়।’’
২০১৪
সালে ভারতের সাথে সমুদ্রসীমার রায় ঘোষণা করা হবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘‘২০১৪ সালে জনগণের সেবা করার সুযোগ পেলে ভারতের সাথে রায়েও
বিজয় ছিনিয়ে আনবো,
সে বিশ্বাস আমাদের আছে।’’
প্রধানমন্ত্রী
২০২১ সালের মধ্যে উন্নত দেশ গড়তে সকলের দোয়া ও সহযোগিতা চান। তিনি এসময় জাতীয়
উন্নয়নে যুবকদের এগিয়ে আসার আহবান জানান।
সংবর্ধনা
অনুষ্ঠানে যুবলীগের পাশাপাশি আওয়ামী লীগের অন্যান্য সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা
উপস্থিত ছিলেন।
No comments:
Post a Comment